প্রবা
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:২১ এএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:২১ এএম
শিক্ষার্থী
নির্যাতনকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন
সাম্প্রতিক সময়ে
কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মধ্যে শিক্ষার্থী নির্যাতন অন্যতম। একসঙ্গে বেশ কয়েকটি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। যা থেকে বোঝা যায়,
সমাজে এ অপরাধটি ক্রমে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে যেভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম,
জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা সামনে
এসেছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক।
সমাজে বর্তমানে
আমরা নানামুখী কর্দযতার ছায়া দেখছি। এর পেছনে দায়ী করা হচ্ছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে।
সেই সঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় কমছে শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ। একদিকে রাজনৈতিক
দুর্বৃত্তায়ন, অন্যদিকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডবিমুখতা আমাদের ক্রমে অন্ধকারের দিকে ঠেলছে।
যার পরিণতি শিক্ষার্থী নির্যাতনের মতো জঘন্য অপরাধ। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কুফলে
অতীতে এ ধরনের অপরাধ করে অনেকে পার পেয়ে যাওয়ার ঘটনাও প্রচুর; যা আগামী দিনের অপরাধীদের
অপরাধের পথে এগিয়ে দিয়েছে। নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বড় অংশ
নীরবে ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়। তাদের ভেতরে কাজ করছে নানামুখী অবসাদ। অনেকে মানসিক রোগেও
আক্রান্ত হয়; যার প্রভাবে আত্মহত্যার মতো অনিবার্য অপ্রত্যাশিত ঘটনাও ঘটছে। অপরাধীর
পার পেয়ে যাওয়া যেমন মেনে নেওয়া যায় না, তেমন বিচার ও প্রতিকার না পেয়ে নির্যাতিতের
চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও মেনে নেওয়া যায় না। ২০২১ সালে প্লান্ট ইন্টারন্যাশনাল
বাংলাদেশের ‘চ্যালেঞ্জিং ফেয়ার অব ভায়োলেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৭০
শতাংশ শিক্ষার্থী সিনিয়র সহপাঠী ও শিক্ষকের মাধ্যমে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন-হয়রানি
ও ব্যঙ্গবিদ্রূপের শিকার হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান জরুরি। শিক্ষাঙ্গনে নির্যাতন-নিপীড়ন
নির্মূল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ
ও সামাজিক-নৈতিক শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া উচিত।
মো. ইয়ামিন আলী
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান
বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রযুক্তির অপব্যবহার বিপথে নিচ্ছে তরুণদের
বর্তমানে সবচেয়ে
জনপ্রিয় সমাজমাধ্যম। এ মাধ্যমের সব প্রক্রিয়াই সব স্তরের মানুষের ওপর চেপে বসেছে। বিভিন্ন
অ্যাপসের মাধ্যমে সমাজমাধ্যমগুলোর ব্যবহার বাড়ছে। প্রতিটি জিনিসের ভালোমন্দ দুই দিকই
থাকতে পারে। মূলত তা নির্ভর করে জিনিসটির ব্যবহারের ওপর। সম্প্রতি প্রযুক্তির ব্যবহার
আমাদের কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা ভাবার সময় এসেছে। সমাজমাধ্যমে মানুষ একে অন্যের সঙ্গে
যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছে। দূরের এমনকি অনেক দিন দৃষ্টির আড়ালে থাকা মানুষকেও খুঁজে
পেয়ে যোগাযোগ করতে পারছে। কম খরচে প্রিয়জনের খোঁজখবর রাখতে পারছে। কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে
সরাসরি ছবি দেখারও সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে সমাজমাধ্যমগুলোর বিভিন্ন অ্যাপস। ফলে সামাজিক
বন্ধন সুদৃঢ় হচ্ছে। কিন্তু ভালোর বিপরীত দিকগুলো নিয়েই বাড়ছে দুশ্চিন্তা। সমাজমাধ্যম
ব্যবহারে কোনো কোনো অসাধু মহল তৈরি করছে সামাজিক বিশৃঙ্খলা। প্রতারণার নেশাও জেঁকে
বসছে। বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ। এ ছাড়া বিশেষ সুবিধাভোগীরা বিভিন্ন অপকর্মের জন্য
তৈরি করছে অপরাধের রাজত্ব। ক্লাস কিংবা পরীক্ষার হলে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও
অনেক শিক্ষার্থীকেই তা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে পরিবারগুলোর
ভেতরেও। সমাজমাধ্যমের নিশ্চিত ব্যবহারের লক্ষ্যে সরকারের নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবি।
নীলকণ্ঠ আইচ মজুমদার
প্রভাষক, আলীনগর
কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ
ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ